Thursday, June 24, 2021

অবুঝ ভালোবাসার গল্প

লেখকঃ মোঃ রেদওয়ান শরিফ ঠিক এই মুহুর্তে আমাকে এক দল মেয়ে গুন্ডা ঘেরোয়া করে রেখেছে, কি অপরাধ করেছি বা কার পাকা ধানে মই দিয়েছি কিছুই জানিনা।।। কোচিং করে বের হয়ে ফাকা মাঠে বসে গল্পের বই পড়ছি।। ঠিক সেই সময় সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মেয়েরা হাজির।। আমি ভয়ে ভয়ে বললাম,, __কি বেপার।।। আমাকে ঘেরাও করে কি খুন করার প্লান করা হচ্ছে নাকি?? মেয়েদের সবাই একসাথে বলল,, __ঠিক তা নয়।। তবে আমাদের কথা না শুনলে হয়ত খুন করতেও পারি।। কি সাংঘাতিক বেপার!! এরা খুন করার কথা কত্ত সহজে বলছে।। মনে হচ্ছে খুন করা ওদের কাছে ডালভাত।। যাই হোক আমি বললাম,, __আমাকে কেন এভাবে ঘেরাও করা হয়েছে বলা যাবে কি?? __অবশ্যই বলা যাবে।। আগে আপনি বলুন তো আপনি নিজেকে কি ভাবেন?? সালমান খান?? __খান নয়।। তবে আমার নাম সালমান সাদিক মনে করি।। __সে যেই হোন না কেন। আপনি আমাদের বান্ধবী তিথিকে এভাবে ঘোরাচ্ছেন কেন?? __কিভাবে ঘোরালাম?? __ও তো আপনাকে অনেক পছন্দ করে।। আপনি ওকে পাত্তা দিচ্ছেন না কেন?? __তাহলে এই বেপার।। আপনারা এখন আমার কাছে কি আশা করছেন?? আপনাদের বান্ধবীর কাছে গিয়ে মাফ চেয়ে আসবো?? __জি হ্যা।। আর তাকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন।। __কিসের অধিকার?? __কিসের অধিকার মানে?? ভালবাসেন তো ওকে। তাহলে তাকে ভাল করে ভালবাসুন না।। __যদি তা না করি?? __তাহলে ওই যে বললাম, খুন করে ফেলবো। __ওকে।।। আপনাদের যা ইচ্ছা তাই করেন। আমি চললাম। এই বলে ওখান থেকে চলে আসলাম।। যত্তোসব আজগুবি কান্ড কারখানা। সে আমায় ভালবাসে তো কি হয়েছে?? তার জন্যে এইভাবে এসে ঘেরাও করার কি দরকার?? ফালতু মাইন্ড এর মানুষ এর ফালতু কাজ।। যাই হোক পরের দিন আবার ক্লাসে গেলাম।। ইংরেজি ক্লাসে খেয়াল করে দেখলাম কেউ একজন আমার দিকে আগুনের মতো দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।। ভাল করে তাকিয়ে দেখলাম যে তিথি আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে।। হয়ত আমার ওপর অনেক রেগে আছে।। থাকারই কথা। সেই স্কুলের সময় থেকে মেয়েটা আমায় ভালবাসে।। আর আমি তাকে এখনো হ্যা বলিনি।। আমার গল্প ভালো লেগে থাকলে এই রকম আরো গল্প পেতে আমাকে ফলো করে আমার সাথে থাকুন এবং আমার টাইমলাইন ফলো করুন ধন্যবাদ তবুও সে পিছনে লেগেই আছে।। তো আমি সেদিকে বেশি মন না দিয়ে ক্লাস শেষ করে মাঠে গিয়ে বসে আছি।। এই ফাঁকে আমার পরিচয় দিয়ে নিই। আমি সালমান সাদিক সানি।। এইবার এইচ, এস, সি পরীক্ষা দেবো।। যে মেয়েটার বেপারে এত কথা হচ্ছে সে হচ্ছে তিথি। আমার ছোটবেলার পরিচিত।। আমি আগে থেকেই একটু চুপচাপ স্বভাবের। তাই আশেপাশে কোথায় কি হচ্ছে তা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাই না।। আমার সমবয়সের অনেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পরেছে। তবে আমার ওসবের কোন ইচ্ছা নেই। ওসব আমাকে দিয়ে হবেও না।। তাই খুব সাধারন ভাবেই থাকি।। তিথি আমার সাধারন স্বভাবের জন্যই হয়ত আমাকে ভালবেসে ফেলেছে।। কিন্তু আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেদের কাউকে ভালবাসা মানায় না। তার ওপর আবার তিথি খুব সুন্দর এবং অনেক ভাল একটা মেয়ে। তাই আমি চাইনা আমার জন্য ও কষ্ট পাক। সেই জন্যেই ওকে আমি একটু অবহেলা করি। সে যাই হোক একটু পরে দেখি তিথি এসে আমার পাশে বসল।। আমি আমার মতো বই পড়ছি।। শেষে ও বিরক্ত হয়ে বলল, "সারাদিন কি এতো বই পড়? মাথা ব্যথা করেনা?" আমি বললাম, "ক্লাসের বই পড়লে ব্যথা করে। গল্পের বই পড়তে সমস্যা হয়না। কেন?" __না এমনি। বই পড়ার সময় আর কোনদিকে খেয়াল করনা তাই।। আমি কতক্ষন থেকে বসে আছি জানো?? __জেনে কি হবে? তোমার কথা সারাদিন ভাবার কোন কারণ আছে কি? __কারণ ছাড়া বুঝি তুমি কোন কাজ করনা?? __করি। তবে খুব কম। তুমি বাড়ি যাবেনা?? অনেক দেরিহয়ে গেছে তো। __হ্যা যাব। তুমি যাবেনা?? চল একসাথে যাই। __আমার একটু কাজ আছে।। তুমি চলে যাও। (মিথ্যে কথা বললাম। আসলে আমার ওর সাথে যাওয়ার ইচ্ছে নেই।) __আবার ফাঁকি দেয়া হচ্ছে? __না তো। কিসের ফাঁকি দিচ্ছি।। কেনই বা ফাঁকি দিতে যাব। __কিছুনা। এমনি। আচ্ছা আমি তাহলে আসি। __আচ্ছা ঠিক আছে। এই বলে তিথি চলে গেলো। আমিও বাসায় আসলাম।। এসেই আম্মুর বকাবকি শুরু হয়ে গেলো। __কোচিং শেষ হয় ১০টায়। এতক্ষনে আসার সময় হল? এতো দেরি করে আসলে বাকি কাজ। কে করে দেবে শুনি। __কেন, তোমার আদরের বড় ছেলে আছে না? তাকে বলতে পারোনা? __ওর আরও অনেক কাজ আছে। তোর মতো বেকার না। __হ্যা তাই তো। ওর তো অনেক কাজ। ১১টায় ঘুম থেকে উঠে কম্পিউটারে বসে ঘাটাঘাটি করা আর ৩টার সময় কম্পিউটার ক্লাস করে রাত ১০টার পরে বাড়ি আসা। আর কি কাজ করে? বাড়ির দুই একটা কাজ করলে কি এমন ক্ষতি হয়ে যাবে? নাকি ওর জন্য কাজ করা হারাম। __ছোট বেলায় ও তোর থেকে বেশি কাজ করেছে। এখন তুই কর। __এই একটা কথা আমি আমার বুদ্ধি বয়স লথেকে শুনে আসছি। আমার ভাই আমার থেকে ৪ বছরের বড়। এই ৪ বছরে ও এতো কাজ করেছে যা আমি ১৮বছরে ও করতে পারিনি। ঠিক না? __হ্যা তাই। এখন তুই বাকি কাজ কর যা। __হ্যা। তাই তো করতে হবে। এই বাড়িতে কাজের লোক তো একটা আছেই। আরেকটা তো লাটসাহেব। __বেশি কথা না বলে কাজ কর। তা না হলে খেতে পারবিনা। __এমন ভাবে বলছো যেন রাজার মতো খাওয়াচ্ছ। নিজের বাড়িতে চাকরের মতো কাজ করে খেতে হয়। এর থেকে বেশি আর কি দিতে পারো? __চুপ চাপ কাজ কর। না হলে বাড়ি ছেড়ে চলে যা। __যখন যাওয়ার ঠিকি চলে যাবো। আর কিছু না বলে কাজ শুরু করলাম। বাবা মারা গেছে ৪বছর আগে। তেমন কিছুই রেখে যেতে পারেনি। বাবার মুখে শুনেছিলাম আমি জন্ম নেয়ার দিনে নাকি আমার নানু- নানী আমাকে দেখতে আসার সময় দুজনেই এক্সিডেন্ট করে মারা যান। তার পর থেকে নাকি আম্মু আমায় তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী মনে করে। আমাকে অপয়া মনে করে। তাই নিজের বাড়িতেও কাজের ছেলে হয়ে থাকতে হয়। বিকেলে এক বন্ধুর কাছে গিয়ে চাকরীর খবর নিলাম। ও বলল ইন্টার এর সার্টিফিকেট পেলে একটা ১৫ হাজার বেতনের চাকরী দিতে পারবে।

No comments:

Post a Comment

The entire Privacy Policy of sotiksomay. is an integral part of the “Terms of Use”. All clauses in t

কাদেরের ঢাবিতে ভর্তির দায়িত্ব নিলেন ইউএনও।

কাদেরের ঢাবিতে ভর্তির দায়িত্ব নিলেন ইউএনও।💜 রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী সাইদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল কাদের।...